কক্সবাজারের চকরিয়ায় ধাওয়া খেয়ে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে নিখোঁজ হওয়া যুবক শফি আলমের (২৬) লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। উদ্ধারের সময় নিহতের গলায় রশি পেঁচানো এবং শরীরে জখমের দাগ রয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা।
তবে পরিবারের দাবি, পুলিশি ধাওয়ায় নয় স্থানীয় ইউপি মেম্বার ও চৌকিদারের নেতৃত্বে পরিকল্পিতভাবে শফি আলমকে হত্যা করা হয়েছে।
রোববার সকালে মাতামুহরী নদীর কন্যারকুম এলাকা থেকে নিখোঁজ শফি আলমের লাশ উদ্ধার করা হয়। গত শুক্রবার দিবাগত রাত দেড়টা থেকে শফি আলম নিখোঁজ হন। নিহত শফি আলম চকরিয়া উপজেলার কৈয়ারবিল ইউনিয়নের ৩নম্বর ওয়ার্ডর শীতারখিল এলাকার মৃত আব্দুল খালেকের ছেলে। তিনি একজন ব্যবসায়ী ছিলেন।
নিহত যুবক শফি আলমের ভাই পুতু আলম বলেন, আমার ভাই ব্যবসা করে চলতেন। ৩নং ওয়ার্ডের মেম্বার এনামুল হকের নেতৃত্বে পরিকল্পিকতভাবে ভাইকে হত্যা করে নদীতে ফেলে দেন। তাকে হত্যার পর এনামুল হক জুয়া খেলার কথা বলে মিথ্যা তথ্য দিয়ে পুলিশকে বিভ্রান্ত করেছে। মূলত মেম্বার এনামুল হক ও চৌকিদার কামাল মিলে গলায় রশি দিয়ে ও মারধর করে মৃত্যু নিশ্চিত করে সকালের দিকে তার লাশ মাতামুহুরী নদীতে ফেলে দেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ইউপি মেম্বার এনামুল হক বলেন, শফি আলম খুব ভালো ছেলে। এতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে তার একটা বদ-অভ্যাস আছে সে নিয়মিত জুয়া খেলতো। স্থানীয় এলাকাবাসী অভিযোগ করায় পুলিশের মাধ্যমে তাদের জুয়া খেলা বন্ধ করার চেষ্টা করেছি।
তিনি আরো বলেন, শফি আলমের পরিবারের সঙ্গে আমার খুব ভালো সম্পর্ক। আমাকে ফাঁসানোর জন্য একটি পক্ষ ষড়যন্ত্র করে শফি আলমের পরিবারকে দিয়ে এসব বলাচ্ছেন বলেও জানান তিনি।
মাতামুহুরী তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ পরিদর্শক (ইন্সেপেক্টর) মো. মিজানুর রহমান বলেন, স্থানীয় মেম্বার এনামুল হকের কাছ থেকে খবর পেয়ে মাতামুহুরী নদীর তীরবর্তী শীতারখিল এলাকায় ৭-৮ জন যুবক জুয়া খেলছে। পরে শুক্রবার রাতে পুলিশের টিম ওই এলাকায় গেলে উপস্থিতি টের পেয়ে কয়েকজন যুবক পালিয়ে যান এবং তিনজন যুবক নদীতে ঝাপ দেন। ওই তিনজন থেকে দুই যুবক সাঁতরে উঠতে পারলেও শফি আলম নামে এক যুবক নিখোঁজ হন।
তিনি আরো বলেন, রোববার সকালে স্থানীয় লোকজন থেকে খবর পেয়ে মাতামুহুরীর নদীর কন্যার কুম থেকে নিখোঁজ শফি আলমের লাশ উদ্ধার করি। ওইসময় লাশের গলায় একটা রশি পেঁচানো ছিলো।
এব্যাপারে জানতে চাইলে চকরিয়া থানার ওসি চন্দন কুমার চক্রবর্তী বলেন, মাতামুহুরী নদী থেকে শফি আলম নামের এক যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পরে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। লাশ উদ্ধারের সময় তার গলায় একটা রশি ছিলো। তিনি আরো বলেন, পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ আসলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথাও বলেন তিনি।