সম্প্রতী সরকার দেশের সব জেলাতে প্রাইভেট হাসপাতাল এবং ডায়গনস্টিক সেন্টার গুলোতে অভিযান শুরু করেছে। এই উদ্দ্যোগকে কাজে লাগিয়ে কক্সবাজারের বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতাল ও ডায়গনস্টিক সেন্টার থেকে ব্যাপক হারে চাঁদাবাজি করা হচ্ছে। অভিযানের ভয় দেখিয়ে কাগজপত্র ঠিক করে দেওয়ার কথা বলে ব্যাপক হারে টাকা আদায় করা হচ্ছে বলে জানান খোদ অনেক ডায়গনস্টিক সেন্টারের মালিক। তাদের সবার অভিযোগ জেলা সিভিল সার্জন অফিসের কর্মচারী কাজী করিমুল্লাহ এবং তার নিয়ন্ত্রনাধীন একটি সিন্ডিকেট এই টাকা আদায় করছে। এছাড়া জেলা শহরের বিভিন্ন হোটেল, মার্কেট মুদিরে দোকানে কর্মচারীদের মেডিকেল ফিটনেস সার্টিফিকেট নিতেও ব্যাপক হারে চাঁদা তুলছে এই করিম সিন্ডিকেট। তবে বিষয়টি জানেন না বলে জানান সিভিল সার্জন।
ঈদগাঁও উপজেলার ২ ডায়াগনস্টিকের মালিক লিখিত এক পত্রে বলেন, আমরা প্রায় ১২ বছর ধরে ব্যবসা করছি, এখানে সত্যি কথা বলতে কিছু সমস্যা আছে এটা সত্য, কিন্তু অনেক আগে থেকে সিভিল সার্জন অফিসকে ম্যানেজ করে এগুলো চলছে, কিন্তু এখন এসে অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি করছে এবং প্রায় সময় হুমিক দিচ্ছে সেন্টার বন্ধ করে দেবে, আগেও সিভিল সার্জন অফিসের করিম সাহেবকে টাকা দিয়ে সব কাজ করতাম এখন টাকা বাড়িয়ে দিলেও আরো চাইছে, সেটা না দেওয়াতে বার বার অভিযানের নামে হয়রানি করছে। তবে আমরাও চাই আমাদের সবকিছু সঠিক নিয়মে চলুক কিন্তু এমন কিছু স্বর্ত আছে যে গুলো পূরণ করা আদৌ সম্ভব না। আর এখানে যারা লাইসেন্স পেয়েছে তারাও একই ভাবে চলছে।
উখিয়া উপজেলা থেকে ফোনে বেশ কয়েকজন ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক জানান, গত কয়েক দিন ধরে সিভিল সার্জন অফিসের করিম সাহেব এখানে এসে প্রতিটি ডায়গনস্টিক সেন্টার থেকে কাগজপত্র দেখার নামে অনেক টাকা তুলছে, যারা তাকে খুশি করতে পারছে তাদের কোন অভিযান নাই। আবার যারা তাদের ইচ্ছামত টাকা দিতে পারছে না তাদের অভিযানের নামে হয়রানি করা হবে বলে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তারা বলেন, যদি আমাদের অনুমতি নাই দিত তাহলে প্রথম থেকে না দিলে আমরা ব্যবসা করতাম না। এত বছর টাকা খেয়ে তারা চুপ ছিল এখন মন্ত্রনালয়ের দুহাই দিয়ে বেশি ঝামেলা করছে।
এদিকে কক্সবাজার শহরের হাসপাতাল সড়কের কক্স ন্যাশনাল হাসপাতালে পরিচালকও তার কাছ থেকে টাকা দিয়ে কাজ করছে না বলে অভিযোগ করেন, তবে কক্স ন্যাশনাল হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে অনিয়মে ভরা, একজন ডাক্তার আর এক নার্স দিয়েই চলছে পুরো প্রতিষ্ঠানটি। ১০ বেড়ের হাসপাতাল হলেও হাসপাতালের কোন সুযোগ সুবিধা এখানে নেই। এ ব্যাপারে ডাক্তার বি আলমগীর বলেন, আমাদের হাসপাতালে আজকের না এটা অনেক বছর ধরে চলছে, তাদের এত সমস্যা হলে আমাকে আগে বলেনি কেন, তবে স্বীকার করেন কিছু সমস্যা আছে সেটা ঠিক হয়ে যাবে।
এদিকে কক্সবাজারের বিভিন্ন হোটেল রেস্তোরা এবং সুপার সপের স্টাফদের ফিটনেস সার্টিফিকেট নিতেও বিপুল টাকা নেয় বলে জানা গেছে, তবে সরকারি ভাবে তা শুধু নাম মাত্র মুল্যে নেওয়ার কথা, এখানে সিভিল সার্জন অফিসের কাজী করিমুল্লাহ নাম বলছে সবাই, তিনি সবার কাছে থেকে টাকা নিয়ে এসব সার্টিফিকেট দেয় বলে জানা গেছে।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কক্সবাজার সিভিল সার্জন অফিসের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, কাজী করিমুল্লাহ একই পদে প্রায় ৩০ বছর ধরে চাকরী করছে,তাই উনার ধরাকে সরা করতে সময় লাগে না, আর ঘুষ দূর্নীতিকে বেশ চতুর। আসলে এখানে ধরার কেই নাই, তার সাথে অন্যান্য সহকারী কর্মীরাও একই সাথে ভাগভাটোয়ারা করে খায়।
এ ব্যাপারে কক্সবাজার সিভিল সার্জন অফিসের অফিস সহকারী কাজী করিমুল্লাহ বলেন, আমি শুধু মাত্র কাগজপত্র জমা দেয়নি। এখানে আমাকে নিয়ে কোন ভুল তথ্যা ছড়ানো কোন সুযোগ নাই।
এ ব্যাপারে কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডা: মাহাবুবুর রহমান বলেন, আমার জানা মতে সিভিল সার্জন অফিসে কোন অনিয়ম দূর্নীতি আমি প্রশ্রয় দিই না। আমার অজান্তে কেউ যদি অনিয়ম করে থাকে সেটা আমাকে জানালে অবশ্যই কঠোর ব্যবস্থা নেব।