চকরিয়া উপজেলার মাতামুহুরী নদীতে সেলো মেশিন বসিয়ে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন চলছে কয়েকবছর ধরে। অভিযান পরিচালনা করলে কিছুদিন বন্ধ থাকলেও পরে একই কায়দায় বালু উত্তোলনে মেতে উঠে জড়িত বালুখেকো সিন্ডিকেট। এতে বালু লুটের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকার বাণিজ্য অব্যাহত রাখলেও সরকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত প্রতিনিয়ত।
জানা যায়, মাতামুহুরী নদীর পুর্ববড় ভেওলা ইউনিয়নের সিকান্দারপাড়া অংশে খায়রু বশর নামের এক দাপটে ব্যক্তি সেলো মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন পুর্বক দিব্যি ব্যবসা চালিয়ে আসছিলেন। স্থানীয় পরিবেশ সচেতন মহলের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে গতমাসে পূর্ববড় ভেওলা ইউনিয়ন ভুমি তহসিলদার আবুল মনসুর ঘটনাস্থলে গিয়ে বালু উত্তোলন বন্ধে জড়িতদের বারণ করেন। ওইসময় অভিযান চালিয়ে কিছু পরিমাণ যন্ত্রপাতি জব্দও করে। বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন তহসিলদার মো. আবুল মনসুর। তিনি বলেন, গতমাসে ইউএনও স্যারের নির্দেশে মাতামুহুরী নদীর সিকান্দারপাড়া অংশে অভিযান পরিচালনা করি। ওইদিন বালু উত্তোলনে জড়িত খায়রুল বশর মুছলেকা দেন মাতামুহুরী নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করবেনা। কিন্তু তিনি মুছলেকা ভঙ্গ করে আবারও বালু উত্তোলন শুরু করেছেন।
ইউনিয়ন ভুমি তহসিলদার মো. আবুল মনসুর বলেন, এলাকাবাসী আবারও চকরিয়া উপজেলা প্রশাসনের দপ্তরে অভিযোগ করেন। এরইপ্রেক্ষিতে বুধবার ১৯ অক্টোবর সকালে মাতামুহুরী নদীর সিকান্দারপাড়া পয়েন্টে অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. রাহাত উজ জামান।
অভিযানের সময় নদীতে ভাসমান বেইজের উপর স্থাপিত ২টি সেলোমেশিন ও বিপুল পরিমাণ পাইপ জব্দ করা হয়। এছাড়াও বালু পরিবহণে ব্যবহৃত একটি পিকআপ গাড়িসহ বিপুল পরিমাণ পাইপ জব্দ করেছে আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। একইদিন দুপুরে মাতামুহুরি নদীর বাটাখালী ব্রীজ পয়েন্ট এলাকায় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাহাত উজ জামানের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালনা করেন।
চকরিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাহাত উজ জামান বলেন, মাতামুহুরী নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে দীর্ঘদিন ধরে একশ্রেণির অসাধু ব্যক্তি অনুমোদন ব্যতিত আইন লঙ্ঘন করে নদী থেকে সেলো মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছিল। এ অবস্থার কারণে সরকার বিপুল অংকের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
এনিয়ে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতিপূর্বে অবৈধ বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে কয়েকদফা অভিযানও চালানো হয়। এছাড়াও বালু উত্তোলন কাজে জড়িতদের প্রশাসন থেকে তাগাদা দিয়ে জানানো হয়েছিল। প্রশাসনের নির্দেশনা অমান্য করে সেলো মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন বন্ধ না হাওয়ায় বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আসলে দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করা হয়।
তিনি বলেন, এভাবে যাঁরা মাতামুহুরী নদী থেকে অবৈধভাবে বালি উত্তোলনে জড়িত থাকবে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।