ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে চকরিয়া উপজেলায় দিনভর ঘুড়ি ঘুড়ি বৃষ্টি হয়েছে। দমকা ঝড়ে হাওয়ার পাশাপাশি মুষলধারে বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। বিকাল ৫টার দিকে বাতাসের তিব্রতাও বাড়ছে। সাধারণ মানুষের মাঝে অজানা আতঙ্কও দেখা দিয়েছে। সারাদিন বিদ্যুৎ না থাকায় অন্ধকারে রয়েছেন পৌরশহরের নাগরিকরা। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং মোকাবেলায় চকরিয়া উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আশ্রয়ণ কেন্দ্র গুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
জানা যায়, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর কারণে আবহাওয়া অধিদপ্তর কক্সবাজারকে ৭নং বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। সিত্রাংয়ের প্রভাবে ধীরে ধীরে বাতাসের বেড়ে চলছে। সাধারণ মানুষের মনে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। বাতাসের তিব্রতা বাড়তে থাকায় চকরিয়া পৌরশহরের দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গুলো বন্ধ রয়েছে। অনেক ব্যবসায়ি দোকানপাট বন্ধ করে বাসা-বাড়িতে চলে গেছে। অনেক মানুষ দিনে কেনাকাটা সেরে ঘরে অবস্থান করছেন। তাছাড়া সারাদিন বিদ্যুৎ না থাকায় বিপাকে পড়েছে সাধারণ মানুষ। রাত ৮টা পর্যন্ত বিদ্যুতের দেখা মেলেনি। ফলে দূর্ভোগে পড়েছেন পৌরশহরের নাগরিকরা। সোমবার সকাল থেকে ১০টা থেকে বৃষ্টি হচ্ছে। মাঝে মধ্যে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। এদিকে বিকাল তিনটার পর থেকে বাতাসের তীব্রতা বেড়ে চলছে।
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে আগাম প্রস্তুতি নিয়েছেন চকরিয়া উপজেলা প্রশাসন। উপজেলার উপকূলীয় ইউনিয়ন গুলোতে থাকা প্রায় অর্ধশতাধিক আশ্রয়ণ কেন্দ্র খালি করা হয়েছে। বেশকয়েকটি মুজিবকিল্লাও খালি রাখা হয়েছে। এসব আশ্রয়ণ কেন্দ্র গুলোতে দূর্যোগকালীন সময়ে প্রায় দুই লক্ষাধিক মানুষ অবস্থান করা সুযোগ রয়েছে। ইতোমধ্যে উপকূলীয় এলাকাতে রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির স্বেচ্চাসেবকরা মাঠে কাজ করছেন। সাধারণ মানুষকে নিরাপদ স্থানে চলে আসার জন্য তারা মাইকিং চালিয়ে যাচ্ছেন। স্বেচ্চাসেবকরা ৭নং বিপদ সংকেত মানিয়ে চলার জন্য লাল পতাকা উঠাচ্ছেন। যে কোন দূর্যোগ মোকাবেলা এবং তাৎক্ষনিক চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে মেডিকেল টীম গঠন করা হয়েছে। তারাও খাবার স্যালাইন, বিশুদ্ধ পানির ট্যাবলেট মজুদ রেখেছেন।
এদিকে, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং মোকাবেলায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আশ্রয়ণ কেন্দ্র গুলোতে শুকনো খাবারসহ প্রয়োজনীয় মালামাল মজুদ রাখা হয়েছে। তাৎক্ষণিক বিপদ কাটিয়ে উঠতে সবধরণের ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেপি দেওয়ান। তিনি বলেন, বঙ্গোপসাগাওে সৃষ্ঠ ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং মোকাবেলায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। উপজেলার ১৮টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার আশ্রয়ণ কেন্দ্র গুলো খালি করা হয়েছে। স্ব স্ব ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে পরিস্কার পরিচ্চন্ন করা হয়েছে। যে কোন বিপদ মোকাবেলায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে। শুকনো খাবারও মজুদ রয়েছে বলে জানান তিনি।
একইভাবে চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরীর নেতৃত্বে কাউন্সিলর, সুশীল সামজের প্রতিনিধি ও কর্মকর্তাদের নিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। পাশাপাশি শকনো খাবার, স্যালাইন ও বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থাও করেছেন।