কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার বরইতলী ইউনিয়নে বনবিভাগের পাহাড় কেটে চলছে মাটি লুটের মহোৎসব। পাশাপাশি ইউনিয়নের মছনিয়াকাটা এলাকায় পাহাড়ের ঢালু কেটে বানানো হচ্ছে সড়ক।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সড়কের নাম দিয়ে মূলত পাহাড়ের মাটি বিক্রি করছেন স্থানীয় বরইতলী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মো. শওকত ও স্থানীয় নাছির উদ্দিনের নেতৃত্বে একটি চক্র।
সরজমিনে দেখা যায়, চিরিঙ্গা-মগনামা বানৌজা শেখ হাসিনা ঘাঁটি সড়কের চকরিয়া উপজেলার মছনিয়াকাটা এলাকার দক্ষিণ অংশে মোরার পাড়ার অবস্থান। সেখানে প্রতিদিন কিছু শ্রমিক একটি পাহাড় কাটছেন। পাহাড়ের মাটি পিকাআপে ভরে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
স্থানীয় লোকজনের দাবি, গত ১০ নভেম্বর রাত থেকে মোরারপাড়া এলাকার এই পাহাড়টি কাটা হচ্ছে। এতে দিনে ব্যবহার করা হয় কর্মসৃজনের শ্রমিক আর রাতে স্কেভেটর দিয়ে মাটি কাটা হয়।
খবর পেয়ে চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের চকরিয়া উপজেলার পহরচাঁদা বনবিট কর্মকর্তা শাহ আলম পাহাড় কাটা সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন। তিনি বলেন, ৭০ ফুট লম্বা, ১৫ ফুট ও ৬ ফুট উচ্চতার একটি পাহাড় কেটে সাবাড় করা হয়েছে।
এঘটনায় স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. শওকত ও স্থানীয় নাছির উদ্দিনের বিরুদ্ধে বনবিভাগের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
স্থানীয় লোকজন বলেন, নাছির উদ্দিন মাটি ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। তাঁর কয়েকটি পিকাআপ গাড়ি ও স্কেভেটর রয়েছে। ইউপি সদস্য মো.শওকতের নেতৃত্বে নাছির উদ্দিন স্কেভেটর লাগিয়ে পাহাড়টি কেটে সাবাড় করে ফেলেছেন। এখন সেখান থেকে গাড়িতে করে মাটি নিয়ে যাচ্ছেন বিভিন্ন স্থানে।
এস্কেভেটর মালিক নাছির উদ্দিন বলেন, পাহাড়টিতে অনেক গাছ ছিল। সেগুলো আগেই কাটা হয়েছে। আমরা শুধু সড়ক বানানোর জন্য পাহাড়ের কিছু অংশ কাটছি। মাটি রাখার জায়গা না থাকায় অন্য জায়গায় মাটিগুলো নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। পাহাড়টি কাটার আগে বনবিট কর্মকর্তা শাহ আলমের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। তিনি রাজি হয়ে সবুজ সংকেত পেয়ে আমরা কাজ করেছি।
বরইতলী ইউপি সদস্য মো. শওকত বলেন, স্থানীয় জনগণের দাবির প্রেক্ষিতে পাহাড়টি কেটে সমান করা হয়েছে। পাহাড়টির দু’পাশে ইট বিছানো সড়ক আছে। এই অংশটি উঁচু হওয়ায় কেটে সমান করেছি। এখানে আমার ব্যক্তি স্বার্থ নয়, জনগণের স্বার্থ জড়িত।
মাটি বিক্রির বিষয়ে মেম্বার শওকত বলেন, আমরা কিছু মসজিদ-মাদ্রাসায় মাটিগুলো দিয়েছি। সেখানে হুজুররা অল্প টাকা দিয়েছেন।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের বারবাকিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা হাবিবুল হক বলেন, বনবিভাগের পক্ষ থেকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। পাহাড় কাটার সঙ্গে ইউপি সদস্য শওকত ও নাছির উদ্দিনের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।