কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ফাঁসিয়াখালীর ঘুনিয়াস্থ মাতামুহুরী নদীর চর থেকে বালি ও উচিতার বিল থেকে পাহাড় কেটে মাটি যুক্ত বালি উত্তোলন করে বিকিকিনি চলছে। এতে সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব, বিপন্ন হচ্ছে পরিবেশ ও প্রতিবেশ। স্থানীয় প্রশাসন ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করলেও এই অপকর্ম থামানো যাচ্ছে না।
অন্যদিকে, বালি উত্তোলন বিষয়ে আত্মপক্ষ সমর্থন করে বক্তব্য দেয়ার জন্য ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ ১৫ জনকে তলব করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম কার্যালয়ে। তলব করা সবাই নিজ নিজ বক্তব্য প্রদান করতে সোমবার (১৬ জানুয়ারি) পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রামের বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক মুফিদুল আলমের দপ্তরে উপস্থিত হয়েছেন। গত ৯ জানুয়ারি তাদের নোটিশ দেয়া হয়।
আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য নোটিশ দেয়া হয়েছে-ফাঁসিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন তার ভাই এখলাস উদ্দিন, রিদুয়ানুল হক, মুজিবুল হক, মোহাম্মদ শামীম, আলাউদ্দিন, সালাহউদ্দিন, আমিন, মিলন দাশ, মৌলভী গিয়াস উদ্দিন, বেলাল উদ্দিন, মো.রুবেল, হুমায়ুন কবির, জামাল উদ্দিন ও রেজাউল করিম।
বিষয়টি নিশ্চিত করে পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজারের সহকারি পরিচালক সাইফুল ইসলাম বলেন, ইতিপূর্বে আমি নিজেই পৃথক টিম নিয়ে দু’দফায় ঘুনিয়া ও দিগরপানখালীস্থ মাতামুহুরী নদীর ভরাট চর থেকে ড্রেজার বসিয়ে বালি উত্তোলনের দৃশ্যটি দেখেছি। দ্বিতীয় দফায় অবৈধভাবে উত্তোলন করা ৭৫ হাজার ঘনফুট বালি নজরে আসে। এই বিষয়টি লিখিতভাবে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করি।
এই বালি উত্তোলনের সাথে কারা জড়িত তার খোঁজ নিয়ে ১৫ জনের নান-ঠিকানা সংগ্রহ করি। তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে লিখিতভাবে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করলে পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের মহাপরিচালক আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য ১৫ জনকেই তলব করেন। এরইপ্রেক্ষিতে ইউপি চেয়ারম্যানসহ তারা নিজেদের জবাবদিহিতামুলক বক্তব্য উপস্থাপন করতে ১৬ জানুয়ারি চট্টগ্রাম কার্যালয়ে উপস্থিত হন।
এব্যাপারে ফাঁসিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চল থেকে একটি নোটিশ পেয়ে নিজেদের বক্তব্য উপস্থাপন করতে সোমবার আমরা ওই দপ্তরে যাই। নোটিশে ভাঙ্গারমুখ এলাকা থেকে বালু উত্তোলনের বিষয় উল্লেখ করা হলেও ওই স্থান থেকে আমি বা আমার কোন লোক বালু তুলেনি। প্রতিপক্ষ একটি চক্র আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমুলকভাবে অভিযোগ দিয়েছে মাত্র। তবুও পরিবেশ অধিদপ্তর ডাকায় আইনের প্রতিশ্রদ্ধাশীল হয়ে আমরা নিজেদের বক্তব্য উপস্থাপন করেছি।
অন্যদিকে মাতামুহুরী নদী থেকে বালু উত্তোলন ছাড়াও উচিতারবিল এলাকায় পাহাড় কেটে মাটি ও বালি আহরণের ওই এলাকা বেশ ক’টি পরিবার বসতি ও ফসলি জমি নিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।