1. iliycharman7951@gmail.com : admin :
শিক্ষার্থীর চেয়ে দুই তিন গুণ বেশি বই নিয়েছে অধিকাংশ স্কুল মাদ্রাসা - matamuhuri - মাতামুহুরী
মঙ্গলবার, ২১ মার্চ ২০২৩, ০১:১৫ পূর্বাহ্ন

শিক্ষার্থীর চেয়ে দুই তিন গুণ বেশি বই নিয়েছে অধিকাংশ স্কুল মাদ্রাসা

মাহাবুবুর রহমান, কক্সবাজার
  • আপডেট : শনিবার, ৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩
  • ৭৪ পঠিত

স্কুলের শিক্ষার্থীর সংখ্যার চেয়ে দুই বা তিন গুণ বেশি বই নিয়ে যাচ্ছে অধিকাংশ স্কুল। বিশেষ করে কেজি স্কুল এবং বেসরকারি মাধ্যমিক স্কুল গুলোতে এই প্রবণতা বেশি বলে জানান শিক্ষা কর্মকর্তারা। ফলে সরকারের অনেক বেশি আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে এবং সরকারি বই অপচয় হচ্ছে। এছাড়া অনেকে সরকারি বই নিয়ে ব্যবসা করছে বলে মন্তব্য করেন শিক্ষা প্রশাসনের কর্মকর্তারা। তবে ইতিমধ্যে অনেক স্কুলকে বই ফেরত দেওয়া সহ প্রয়োজনে শাস্তির আওতায় আনার কথা চিন্তা করছেন তারা।

কক্সবাজার সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো: সাইফুল ইসলাম বলেন, সম্প্রতি বিভিন্ন কেজি স্কুল পরিদর্শনে গিয়ে দেখে গেছে স্কুলে ১ম শ্রেণিতে শিক্ষার্থী আছে ১৫ জন কিন্তু উক্ত স্কুল বইয়ের চাহিদা দিয়েছে ৩৫ জনের আমরা হয়তো দিয়েছি ২৫ জনের। পরে দেখা গেছে, বাকি বই তারা স্কুলেই রেখে দিয়েছে।

তিনি জানান, ঈদগাও এলাকার এক স্কুলে গিয়ে দেখেছি পুরো স্কুল মিলে শিক্ষার্থী আছে ৬৭ জন। কিন্তু তারা বইয়ের চাহিদা দিয়েছে ৩০০ সেট। পরে তাদের ২০০ সেট বই দেওয়া হয়েছে। এখন ৬৭ জনের বাইরে তারা বই গুলো কি করবে ?

তিনি জানান, ২ ফেব্রুয়ারি সকালে কক্সবাজার শহরের পাহাড়তলী এলাকায় পাহাড়তলী কেজি স্কুল পরিদর্শনে গিয়ে দেখা গেছে ১ম এবং ২য় শ্রেণিতে শিক্ষার্থী আছে ১৫ এবং ১৭ জন কিন্তু তারা আমার কাছ থেকে বই এনেছে ৩০ সেট করে। আমি মনে করি এটা নষ্ট মানসিকতা এর ফলে সরকারের ব্যাপক আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে অন্যদিকে সরকারি বই নিয়ে তারা ব্যবসা করছে। এখন আমি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে বিষয় গুলো জানিয়েছি প্রয়োজনে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, কয়েকটি সরকারি স্কুল ছাড়া বেশিরভাগ বেসরকারি স্কুল গুলো শিক্ষার্থীর চেয়ে ২ বা ৩ গুণ বেশি বইয়ের চাহিদা পাঠায়। ফলে আমরাও ঢাকাতে সে সব চাহিদা পাঠায় এতে সরকারের অনেক বেশি আর্থিক ক্ষতি হয় এটা কখনো কাম্য নয়। অতীতে এ সব বিষয়ে কোন কঠোরতা না থাকলেও এখন বিষয় গুলো নজরদারী করা হচ্ছে বলে জানান জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো: নাছির উদ্দিন।

তিনি বলেন, এটা সত্য অনেক স্কুল এবং মাদ্রাসায় চাহিদার তুলনায় অনেক বেশি বইয়ের চাহিদা পাঠায়। মূলত তারা শিক্ষাবর্ষের মাঝখানে ছাত্রছাত্রী ভর্তি করানোর জন্য এসব অবৈধ পন্থা অবলম্বন করে এটা আসলেই অন্যায়।
এব্যাপারে ঈদগাঁও উপজেলা সুজনের সভাপতি মনজুর আলম বলেন, এটা আমি অনেক দিন থেকে খেয়াল করছি। অনেক কেজি স্কুল, মাদ্রাসা এবং বেসরকারি স্কুল গুলোতে শিক্ষার্থীর চেয়ে অতিরিক্ত বই আনছে তারা আবার সেগুলো বিভিন্ন প্রতিষ্টানেও দিয়ে দেয়। যেমন অনেক স্কুলের প্রধান শিক্ষক আবার নিজের আলাদা নুরানী বা অনেক শিক্ষা প্রতিষ্টান গড়ে তুলেছে সেখানে তারা বই দেয়।

এক কথা সরকারের বই নিয়ে তারা ব্যবসা করে। আর শিক্ষা ব্যবস্থা এখন পুরোপুরি বানিজ্যকে পরিণত হয়েছে। সম্প্রতি ঈদগাঁও এলাকার এক আলোচিত প্রধান শিক্ষক যিনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে অবসর গ্রহণ করার সময় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীকে দিয়ে পা ধুয়ে, বড় বিদায় সংবর্ধনা নিয়েছে। কিন্তু সেই প্রধান শিক্ষক এখন তারই সেই সরকারি স্কুলের পাশে নিজে একটা কেজি স্কুল গড়ে তুলেছেন। তাহলে কি বুঝা যায় তিনি সারাজীবন সরকার থেকে সুবিধা নিয়েছে এখন সরকারি স্কুলের বিরুদ্ধে বাশঁ দেওয়া শুরু করেছে।

কক্সবাজার সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ও বর্তমান উত্তোরণ মডেল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর একেএম ফজলুল করিম চৌধুরী বলেন, শিক্ষকরা হচ্ছে সমাজের আদর্শ উনাদের কাছ থেকে সমাজের প্রতিটি স্তরে মানুষ শিখবে। কিন্তু অনেক সময় শিক্ষকরা কিছু কাজ করে যার জন্য প্রশ্ন উঠে যেমন অতিরিক্ত বইয়ের চাহিদা আমি কেন দেব এটা সরকারকে বেকায়দায় ফেলা আর জনগণের টাকার অপচয় করা। এটা কখনো হতে দেওয়া উচিত নয়।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও খবর

© All rights reserved © 2019 LatestNews
Theme Customized BY Iliaych