চকরিয়া পৌরসভার উচ্চমান সহকারী ওসমান গণি। বাড়ি পৌরএলাকার ৭নং ওয়ার্ডের পালাকাটা গ্রামে। টেকনাফ পৌরসভা থেকে বদলী হয়ে চকরিয়া পৌরসভায় যোগদান করেছে বেশ কয়েক বছর হয়েছে। মামলা মোকদ্দমা ও পারিবারিক মামলাও নিয়ে দেখভাল করেন। সম্প্রতি সময়ে আমিরাবাদ গোলামবারী হাই স্কুলের এসএসসি’ ৯৩ ব্যাচ এর মিনার নামে একজন নারী বান্ধবীর একটি পারিবারিক মামলা নিস্পত্তির জন্য তার কাছে আছে। এ নারীর স্বামীর বাড়ি চকরিয়া পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডে হালকাকার এলাকায়।
ওসমান ওই পারিবারি মামলা নিস্পত্তি করতে গিয়ে নারী বান্ধবীর সাথে তার পরিচয় হয়। নিয়মিত মোবাইলে তারা যোগাযোগ রক্ষা করে। এসব ফোনালাপের অডিও রেকর্ড সংরক্ষিতও রয়েছে। একপর্যায়ে ওই নারী বান্ধবী কর্তৃক প্রভাবিত হয়ে ও অনেকটা মোটা টাকার বিনিময়ে পৌর মেয়রের অগোচরে একটি মিমাংসিত বিষয়কে কোন ধরনের পারিবারিক আইনের তোয়াক্কা না করে প্যানেল মেয়রের কাছ থেকে ওই নারীর পক্ষে একটি রোয়াদাদ আদায় করে দিয়ে ওই নারীকে জিতিয়ে দেয়। যা সম্পূর্ণ আইন বিরুদ্ধে। এতে করে নারীর স্বামী ভুক্তভোগী সীমাহীনভাবে মানষিক ও শারিরীক সমস্যা গ্রস্থ হয়ে পড়েন।
এদিকে খোজ নিয়ে জানা গেছে, চকরিয়া পৌরসভায় ওসমানের দপ্তরে শতশত পারিবারিক মামলা নিস্পত্তি না হওয়াতে পড়ে আছে। অনেকে সংসার জীবনে ফিরে গেছে। পৌরসভার মেয়রসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীর জানান, আমরা পারিবারিক বিরোধ নিস্পত্তি করে দাম্পত্য জীবন ফিরিয়ে দিই। বিচ্ছেদে আমরা বিশ্বাসী নয়। সে ক্ষেত্রে কোন স্বার্থে ওসমান গণি এমন একটি গর্হিত কাজ করে মেয়র কে প্রশ্নের সম্মুখীন করে ত্লুল। ওসমান গণির ব্যাপারে খোজ নিয়ে জানা গেছে সে টেকনাফ পৌরসভা থেকে চকরিয়া পৌরসভায় বদলী হয়ে আসার পর থেকে শালিশ ও বিচার বাণিজ্য করে ভুক্তভোগী বাদী বিবাদীদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। বিচার কার্যক্রম দীর্ঘ সুত্রীতায় ফেলে বাদী বিবাদীদের নিয়মিত হয়রানি করে যাচ্ছে। মেয়র, কাউন্সিলর ও সচিবের অগোচরে মামলার রায় ওলোট পালট করে আর্থিক ফায়দা হাসিল করে যাচ্ছে। এতে ফরিয়াদীরা সীমাহীন ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। বিজ্ঞ আদালতে কোন মামলা দায়ের হলে তা তদন্তের জন্য চকরিয়া পৌরসভায় পাঠানো হয়। তাছাড়া ভুক্তভোগী কর্তৃক মেয়র বরাবরে করা আবেদন সহ এসব মামলা তদন্তের দায়িত্ব নেন ওসমান গণি। পরে ওই সব মামলা বাদী বা বিবাদি পক্ষ নিয়ে কোন সুরহায় না গিয়ে দিনের পর দিন তাদের হররানি করা হচ্ছে। বর্তমানে অনেক মামলা নিস্পত্তি না হওয়াতে ফাইলের পর ফাইল আটকে আছে। ওসমান গণি মেয়রের নির্দেশের কোন তোয়াক্কা করছে না। তাছাড়া এসব মামলার পাশাপাশি মেয়র অতিরিক্ত হিসেবে পারিবারিক মামলা নিস্পত্তির দায়িত্ব দেন। ওসমান গণি এসব মামলায় স্বামী-স্ত্রী কাউকে নোটিশ না করে গোপনে মোটা টাকার বিনিময়ে এসব মামলা নিস্পত্তিতে সহযোগিতা করেন। পারিবারিক দাম্পত্য জীবন পুনরুদ্ধার তো দুরের কথা এতে অনেক অসহায় নারী ও পুরুষের সংসার জীবনে বিচ্ছেদের সৃষ্টি হয়ে তাদের পুরো জীবন অন্ধকার হয়ে পড়ে। এছাড়া ও ওয়ারিশ সনদ ও মৃত্যু সনদ বাণিজ্য করে ওসমান গণি হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা। অহরহ ভূয়া ওয়ারিশ ও মৃত্যু সনদ দিয়ে মানুষকে আর্থিক ভাবে ঠকিয়ে দিচ্ছে। অনেক ভুক্তভোগী ওয়ারিশান সম্পত্তি বঞ্চিত হয়ে পথে বসেছে।
এদিকে চট্টগ্রামের ব্যাটারি গলি এলাকার আয়েশা বেগম নামে এক নারী চকরিয়া পৌরসভার বাসিন্দা স্বামীকে একটি উকিল নোটিশ পাঠায় গতবছরের জানুয়ারিতে। চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী এবিষয়ে স্বামী-স্ত্রী উভয়ের অভিভাবক নিয়ে বসে দাম্পত্য জীবন পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়ার ব্যবস্থা করেন। কিন্তু ওসমান গণি পৌর মেয়রের নির্দেশ উপেক্ষা করে গোপনে ওই নারীর সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে। পরে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে মহিলার স্বামীর অগোচরে ওই নারীর পক্ষে ডিগ্রী পাইয়ে দেন প্যানেল মেয়র ফোরকানের মাধ্যমে।
এব্যাপারে ওসমান গণির সাথে যোগাযোগ করা হলে, তিনি এব্যাপারে কিছু জানাতে অনীহা প্রকাশ করেন। চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমি অবগত হয়েছি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়াও ওসমান গণি নিজের এনআইডি জালিয়াতি করে বয়স কম দেখিয়ে পৌর সার্ভিস আইন অমান্য করে চাকুরী নেন। এনআইডিতে দেখা গেছে তার বড় ভাই বয়সে তার চেয়েও ছোট। তার বাড়ি চকরিয়া পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের পালাকাটা হলেও নিজের এনআইডিত দক্ষিণ লক্ষ্যারচর দেখানো হয়েছে। এসবের তদন্ত হওয়া জরুরী।
তার স্ব-নামে বেনামে রয়েছে অনেক সম্পদ।