1. iliycharman7951@gmail.com : admin :
ঈদগাহ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম দূর্নীতি অভিযোগ - matamuhuri - মাতামুহুরী
শনিবার, ১০ জুন ২০২৩, ০৭:৪০ পূর্বাহ্ন

ঈদগাহ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম দূর্নীতি অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার
  • আপডেট : শুক্রবার, ৭ এপ্রিল, ২০২৩
  • ৬৭ পঠিত

কক্সবাজারের ঈদগাহ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ,পছন্দের শিক্ষকদের নিয়ে নীতিমালা না মেনে ক্লাস রুটিন করে প্রাইভেট বানিজ্য, স্কুলের সম্পদের অপব্যবহার করে টাকা আয় সহ ক্ষমতার অপব্যবহার ও নানান বাহানা দিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে জোরপূর্বক টাকা আদায় করে আত্মসাৎ সহ স্কুলের শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করার অভিযোগ উঠেছে। ঈদগাহ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির নির্বাচিত ৪ জন সদস্য শিক্ষামন্ত্রী, শিক্ষা অধিদপ্তর, দূর্নীতি দমন কমিশন, জেলা প্রশাসক সহ জেলা শিক্ষা অফিসার বরাবরে এই অভিযোগ করেন।

ঈদগাহ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির অভিভাবক সদস্য ঈদগাহ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছৈয়দ আলম, শহিদ উল্লাহ মিয়াজী, এস এম সরওয়ার কামাল, রমজান আলী একাধিক দপ্তরে লিখিত অভিযোগ জানান, ঈদগাহ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খুরশীদুল জান্নাত গত ৩ বছরে স্কুল থেকে বিভিন্ন খাতে অন্তুত ১ কোটি ৭৮ লাখ ৭০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছে।

তার মধ্যে খাতগুলো হলো বিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্মচারীদের প্রফিডেন্ট ফান্ড থেকে ২৭ মাসের ২৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা, কোন প্রকার রশিদ ছাড়া প্রশংসা পত্র, বোর্ড সার্টিফিকেট ও প্রত্যায়ন ফি বাবদ ২৫ লাখ টাকা, বিদ্যালয়ের ৩৩ টি দোকান বরাদ্দের আড়ালে বিনা রশিদে সালামীর অতিরিক্ত টাকা ৩৩ লাখ, বিনা টেন্ডারে উন্নয়নের নামে ৩০ লাখ, স্কুলের দোকানের মধ্যে ১ টি দোকানে বিনা রশীদে ভাড়া আদায় ১ লাখ ৮০ হাজার, ২০২২ ও ২০২৩ সালের ভর্তি ফরমের টাকা বিদ্যালয়ের ফান্ডে না দিয়ে আত্মসাৎ ২ লাখ, ২০২২ সালে শুদ্ধ উচ্চারণ প্রশিক্ষণের নামে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা,২০২৩ সালে এসএসসি পরীক্ষার্থী থেকে আমানত ফি গ্রহণ ও আত্মসাৎ ৫ লাখ, বিদ্যালয়ে মার্কেট নির্মাণে অনিয়ম বিভিন্ন ভাবে স্কুল ফান্ড থেকে সর্বমোট ১ কোটি ৭৮ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে যার প্রত্যেকটি প্রমাণ আছে।
এছাড়া স্কুলে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করে প্রধান শিক্ষকের ইচ্ছামত ক্লাস রুটিন করে পুরুস্কুলকে উনার নিজস্ব শিক্ষক দিয়ে প্রাইভেট বানিজ্যের অভয়ারণ্য গড়ে তুলেছে। যেমন বর্তমান ক্লাস রুটিন অনুযায়ী প্রধান শিক্ষকের কোন ক্লাস নেই।

এছাড়া নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী গণিত এবং ইংরেজী বিষয়ে মাস্টার ট্রেইনার প্রাপ্ত শিক্ষকতে ৬ষ্ট এবং ৭ম শ্রেণীতে গণিত এবং ইংরেজী ক্লাস দেওয়া বাধ্যতামূলক হলে তা দেওয়া হয়নি। নিয়ম না থাকলেও সম্পূর্ন ব্যক্তিগত ভাবে মোজাম্মেল হক নামের এইচএসসি পাস একজনকে শিক্ষককে দেওয়া হয়েছে গুরুত্বপূর্ন ক্লাস। নুরুল আবছার ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে এমপিও ভুক্ত শিক্ষক হলেও তাকে হিসাববিজ্ঞান ক্লাস দেওয়া হয়নি। স্কুলে পর্যাপ্ত বিএসসি ও ব্যবসায শিক্ষা বিভাগের শিক্ষক থাকার পরও অবৈধ ভাবে নিয়োগ পাওয়া খন্ডকালীন শিক্ষক মোহাম্মদ আলম ব্যবসায় ব্যবস্থাপনায় নিয়োগ পেলেও তাকে দিয়ে বছরের পর বছর ৮ম, ৯ম, ১০ম শ্রেণীর গণিত এবং হিসাবে বিজ্ঞান ক্লাস করে আসছে।

একই ভাবে খন্ডকালীন শিক্ষক গিয়াস উদ্দিন নিয়োগ হিসাব বিজ্ঞান বিভাগে নিয়োগ পেলে ৯ম, ১০ম শ্রেণীর ইংরেজী ক্লাস করে আসছে যা সম্পূর্ন নিয়ম বর্হিভ’ত। স্কুলের বিএসসি শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বিভিন্ন শ্রেনীতে গণিত ক্লাব পেয়েছে ২ টি অথচ কোন যোগ্যতা না থাকা সত্বেও অন্য বিভাগে নিয়োগ পাওয়া খন্ডকালীন শিক্ষক মো: আলম ও দেলোয়ার গণিত পেয়েছে ৩ টি করে ক্লাস। মূলত এলাকার মানুষ তাদের ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠায় ভাল শিক্ষা পাওয়ার জন্য কিন্তু এখানে প্রধান শিক্ষকের লোভ এবং অনিয়ম দূর্নীতিতে পড়ে কি শিক্ষা পাচ্ছে আসলে তা কেউ জানেনা। এ ব্যাপারে ঈদগাহ সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছৈয়দ আলম বলেন, ঈদগাহ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে আজকের এই পর্যায়ে আসার পেছনে আমাদের এবং আমাদের পূর্ব পুরুষের অনেক অবদান আছে, কিন্তু বর্তমানের ক্ষমতার অপব্যবহার করে এই স্কুলের সম্পদ লুটেপুটে খাচ্ছে কিছু বহিরাগতরা।

তার সাথে যোগ দিয়েছে বর্তমান প্রধান শিক্ষক খুরশীদুল জান্নাত। যার স্বামী নিজস্ব কোন আয় না থাকলেও রয়েছে অনেক প্রতারণা ও চেকের মামলা। কিন্তু সেই প্রধান শিক্ষক অল্প বেতন দিয়ে বর্তমানে কক্সবাজারের সবচেয়ে ব্যায় বহুল থানা রোড়ের পেছনে কোবা টাওয়ারে কোটি টাকা দিযে ফ্ল্যাট কিনে সেখানে বসবাস করছে।

তিনি নিয়মিত স্কুলে আসা যাওয়া করে রিজার্ভ গাড়ী দিয়ে চলেন আলিশান ভাবে যা আমাদের পক্ষেও সম্ভব না।

এদিকে স্কুলের নবম ও দশম শ্রেণীর বেশকয়েকজন শিক্ষার্থীর সাথে কথা বললে তারা বলেন, স্কুলের বাইরে দোকান বা অনিয়ম দূর্নীতি কি হচ্ছে সেটা নিয়ে আমরা বলতে পারবো না, তবে ক্লাবে বেশ অনিয়ম হচ্ছে এটা সত্য।

এখানে অনেক অনবিজ্ঞ শিক্ষকদের দিয়ে গুরুত্বপূর্ন ক্লাস গুলো করানো হয়। আর ৬ ষ্ট শ্রেণী থেকে শুরু করে কিছু শিক্ষকদের কাছে প্রাইভেট পড়াতে বাধ্য করে। প্রাইভেট না পড়লে নানান ভাবে হয়রানী করা হয়। এসব কিছুতে প্রধান শিক্ষক সরাসরি জড়িত।

এছাড়া উক্ত প্রধান শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অতীতে প্রশ্নফাঁস,নকল সরবরাহ থেকে শুরু করে অনেক গুরুত্বর অভিযোগ ছিল সে সব বিষয়ে তিনি শাস্তিভোগ করেছেন।
অবশ্য এসব বিষয় অভিযোগ সত্য নয় বলে দাবী করে প্রধান শিক্ষক খুরশীদুল জান্নাত বলেন, এখানে কিছু স্থানীয় রাজনীতির শিকার আমি। আর আমার সময়ে স্কুলের অবকাঠামো গত সহ শিক্ষার আমুল পরিবর্তন হয়েছে সেটা সবাই জানে। তাই অনেকে অমুলক অভিযোগ করে স্কুলের শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করছে।
এ ব্যাপারে সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো: সেলিম উদ্দিন বলেন, ঈদগাহ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের বিষয়ে কিছু অভিযোগ আমাদের হাতে এসেছে। সে সব বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। আর রুটিনের বিষয়ে সমন্নয় করতে প্রধান শিক্ষককে বলা হয়েছে।

এ ব্যাপারে জেলা শিক্ষা অফিসার মো: নাছির উদ্দিন বলেন, আমার হাতে উক্ত স্কুল বিষয়ে অনেক অভিযোগ এসেছে, যতটুকু জানি উপজেলা পর্যায়ে তদন্ত চলছে আবার আমাদের পক্ষ থেকেও তদন্ত করা হবে। আর ক্লাস রুটিন বিষয়ে সরকারি নির্দেশনা মানে চলতে বলা হয়েছে। তবুও না হলে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও খবর

© All rights reserved © 2019 LatestNews
Theme Customized BY Iliaych