ঘুর্ণিঝড় মোচার তান্ডব মোকাবিলায় কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলা প্রশাসন সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন। ইতোমধ্যে ঘুর্ণিঝড়ের প্রস্তুতি হিসেবে উপজেলার দুর্যোগ এলাকায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৯৮টি সাইক্লোন সেন্টার ও ১৮টি ভ্রাম্যমান মেডিকেল টিম। বুধবার (১০ মে) বিকালে চকরিয়া উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত উপজেলা প্রশাসনের প্রস্তুতি সভায় এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো.রাহাত উজ জামান।

ঘুর্ণিঝড়ের তান্ডব মোকাবিলায় প্রস্তুতি সভায় উপস্থিত ছিলেন, চকরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদী। অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন চকরিয়া উপজেলার ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (সহকারী কমিশনার ভুমি) মো.রাহাত উজ জামান।

অনুষ্ঠিত জরুরী সভায় বক্তব্য দেন চকরিয়া সেনা ক্যাম্পের প্রতিনিধি ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ জাবের, চকরিয়া উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মকছুদুল হক ছুট্ট, উপজেলা কৃষি অফিসার এসএম নাছিম হোসেন, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চন্দন কুমার চক্রবর্তী, উপজেলা রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির (সিপিপি) টিম লিডার ও মাতামুহুরী সাংগঠনিক থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বাবলা।

সভায় বক্তব্য দেন চকরিয়া উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিআরডি), প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) আবু হাসনাত সরকার, চকরিয়া পৌরসভার প্রধান নির্বাহী মাস-উদ মোর্শেদ, উপজেলা রেড ক্রিসেন্ট কর্মকর্তা, উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের (উপজেলা সরকারি হাসপাতাল) প্রতিনিধি, ফায়ার স্টেশনের কর্মকর্তা, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. নজরুল ইসলাম, উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, উপজেলা আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা, বদরখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরে হোছাইন আরিফ, কাকারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো.শাহাব উদ্দিন, সাহারবিল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নবী হোছাইন চৌধুরী, বমুবিলছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনজুরুল কাদের, বরইতলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ছালেকুজ্জামান, ফাসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. হেলাল উদ্দিন, ডুলাহাজারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাসানুল ইসলাম আদর ছাড়াও উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সিপিপি নেতৃবৃন্দ প্রমুখ।
চকরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদী বলেন, ঘুর্ণিঝড় মোচার মোকাবিলায় প্রশাসন সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন। কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বিভিন্ন এলাকায় অবস্থিত মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতল বিশিষ্ট ভবনসহ মোট ৯৮টি সাইক্লোন সেন্টারকে দুর্যোগ প্রবণ এলাকার জনসাধারণের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ঘুর্ণিঝড়ের আগেরদিন থেকে রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সিপিপি ও আনসার সদস্যরা এসব সাইক্লোন সেন্টারে নিরাপত্তা ও লোকজনের থাকা খাওয়া সব বিষয়ে তদারকি করবেন। দুর্গত জনপদে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মোট ৭০টি বিভক্ত হয়ে কাজ করবে।
সভায় তারা আরও বলেন, দুর্যোগ মোকাবেলার অংশ হিসেবে জনগণের মাঝে চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতে চকরিয়া উপজেলা সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক নার্স সমন্বয়ে মোট ১৮টি মেডিকেল টিম উপজেলার ১৮ ইউনিয়নে দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া উপজেলা প্রাণী সম্পদ বিভাগ থেকে দুর্যোগ মুহুর্তে গবাদি পশুর চিকিৎসার জন্য ভেটেরিনারি মেডিকেল টিমও কাজ করবে। তারা বলেন, দুর্গত জনপদের সার্বিক নিরাপত্তা ও জনগণের বিপদ সংকুলান মুহূর্তে চকরিয়া থানা পুলিশের একাধিক টিম মাঠ থাকবেন। পাশাপাশি সরকারি হাসপাতালের দুইটি এম্বুলেন্স ও থানা পুলিশের দুই গাড়ি জরুরী মুহূর্তে পরিবহন কাজে নিয়োজিত থাকবেন।
ভারপ্রাপ্ত চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাহাত উজ জামান বলেন, দুর্যোগ প্রবণ এলাকায় গরীব মানুষের জন্য প্রশাসনের তরফ থেকে শুক খাবার ও নিরাপদ পানি সুবিধা নিশ্চিত করা হবে। ঘুর্ণিঝড়ের ঘটনা ঘটলে লোকালয়ে পানি বেড়ে গেলে উপকূলীয় অঞ্চলের পাউবোর নিয়ন্ত্রাধীন স্লুইগেট গুলো তাৎক্ষণিক খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।