1. iliycharman7951@gmail.com : admin :
হাসপাতালে ভর্তি অবস্থায় ব্যাংক কর্মকর্তাকে স্ট্যান্ডরিলিজ! - matamuhuri - মাতামুহুরী
শনিবার, ১০ জুন ২০২৩, ০৭:৩১ পূর্বাহ্ন

হাসপাতালে ভর্তি অবস্থায় ব্যাংক কর্মকর্তাকে স্ট্যান্ডরিলিজ!

নিজস্ব প্রতিবেদক :
  • আপডেট : শনিবার, ২০ মে, ২০২৩
  • ৩২ পঠিত

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার কাকারা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ কাকারা গ্রামের বাসিন্দা মৃত মৌলভী ফেরদৌস আহমদের ছেলে মোহাম্মদ উল্লাহ লেখাপড়া শেষে ২০০৬ সালের ২ ফেব্রæয়ারি গ্রামীণ ব্যাংকে যোগদান করেছিলেন। প্রথম চাকুরী কক্সবাজার সদর উপজেলার বাংলাবাজার ব্রাঞ্চে। এরপর চাকুরী করেছেন একই উপজেলার খুরুস্কুল ও সর্বশেষ ঈদগাও ব্রাঞ্চে।
কর্মজীবনে তিনি দক্ষতার স্বাক্ষর রেখেছেন বলে সে সময় উধ্বর্তন কর্মকর্তারা তাকে ঈদগাও শাখায় সেকেন্ড অফিসার হিসেবে পদায়নও দিয়েছেন।

জানা গেছে, কক্সবাজারের ঈদগাঁও শাখার অধীনে স্থানীয় ইসলামাবাদ ইউনিয়নের ইউছুপেরখিল এলাকায় মাঠ কালেকশনে কর্মরত থাকাবস্থায় তাকে বদলি করা হয় ঠাকুরগাঁওয়ে। পরিবার সদস্যরা অভিযোগ করেছেন, গত ৯ মে অতর্কিতভাবে বদলি করার খবর পেয়ে মাঠে কর্মরত অবস্থায় স্ট্রোক করেন ব্যাংক কর্মকর্তা মোহাম্মদ উল্লাহ। তাৎক্ষণিক তাকে কক্সবাজার নিয়ে গিয়ে বেসরকারি ইউনিয়ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শাররীক অবস্থার অবনতি হলে তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়।

গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়া মোহাম্মদ উল্লাহ কক্সবাজারের ঈদগাঁও ইউনিয়ন গ্রামীণ ব্যাংক শাখায় সেকেন্ড ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত। তিনি বর্তমানে চিকিৎসকের তত্বাবধানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিশ্রামে রয়েছেন।

মোহাম্মদ উল্লাহর স্ত্রী মিফতাহুল জান্নাত নিপা বলেন, গ্রামীণ ব্যাংকের বিনিয়োগ সেক্টরে কাজ করার সুবাদে প্রতিদিনের মতো টাকা তুলতে ইসলামাবাদের ইউছুপুরখিল কেন্দ্রে যান মোহাম্মদ উল্লাহ। সেখানে কর্মরত অবস্থায় পূর্বের কোনো নোটিশ ছাড়াই তাকে জোনাল ম্যানেজার তাকে ফোন দিয়ে ঠাকুরগাঁও জোনে বদলি করা হয়েছে বলে জানান। এ খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মোহাম্মদ উল্লাহ স্ট্রোক করে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করান। এমনকি হাসপাতালে ভর্তি অবস্থায় কোনো কালক্ষেপণ না করে একদিনের মধ্যে রিলিজ নিয়ে সেখানে (ঠাকুরগাঁও) চলে যেতেও নির্দেশনা জারি করে কর্মকর্তারা।

মোহাম্মদ উল্লাহর স্ত্রীর দাবি, জোনাল ম্যানেজার ও এরিয়া ম্যানেজার রোমান জামান পাটোয়ারী যোগদানের পর ঈদগাঁও শাখার সব কর্মকর্তাকে বিভিন্নভাবে অতিরিক্ত কাজের চাপ প্রয়োগ এবং মানসিক নির্যাতন চালিয়ে আসছেন। তাদের অতিরিক্ত চাপে ইতোমধ্যে অনেক কর্মকর্তা বদলি হয়ে অন্যত্র চলে গেছেন। আবার অনেকে চাকরি ছেড়ে দিয়ে অবসরে গেছেন। এ বিষয়ে জোনাল ম্যানেজার ও এরিয়া ম্যানেজারের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

গ্রামীন ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বলেন, জোনাল ম্যানেজার ও এরিয়া ম্যানেজার নিয়মের বাইরে অতিরিক্ত কাজের চাপ ও মানসিক নির্যাতনের প্রতিকার চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে একাধিকবার লিখিত অভিযোগ করেও কোনো প্র্রতিকার না পেয়ে অনেকেই চাকরি ছেড়েছেন।

অসুস্থ গ্রামীণ ব্যাংক কর্মকর্তা মোহাম্মদ উল্লাহ বলেন, গত রমজানে চকরিয়া উপজেলার কাকারা ইউনিয়নে আমার গ্রামের বাড়িতে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আমার পরিবারের বিশাল ক্ষতিসাধন হয়েছে। ঘটনাটি নিয়ে আমি এখনো মানসিকভাবে আঘাতগ্রস্থ। তিনি বলেন, বাড়ি পুড়ে যাওয়ায় এখনো ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের জন্য কোন কুলকিনারা করতে পারিনি, ঠিক সেই মুহূর্তে কোন কারণ ছাড়াই বিনা নোটিশে আমাকে ঠাকুরগাঁও বদলি করা হয়েছে। কতটা নির্মম ও অমানবিক হলে একজন মানুষের জন্য এইধরনের কাজ করতে পারে সেটি দেখিয়ে দিয়েছেন গ্রামীণ ব্যাংকের জোনাল ম্যানেজার। আমি এইধরনের অযৌক্তিক আচরণের জন্য দায়ী কর্মকর্তাদের শাস্তি চাই গ্রামীণ ব্যাংকের উধবর্তন মহলের কাছে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কক্সবাজার গ্রামীণ ব্যাংকের এরিয়া ম্যানেজার রোমান জামান পাটোয়ারী বলেন, ‘হঠাৎ বদলির কারণে হয়তো মোহাম্মদ উল্লাহ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। আমি নিজেও তাকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলাম। কিন্তু এ বিষয়ে আমাদের উপর দায় দেওয়া ঠিক না। আমাকেও তো অফিস সিলেট থেকে বদলি করে কক্সবাজারে পাঠিয়েছে।’ সেইজন্য কী কাউকে দায়ী করছি।

অতিরিক্ত কাজের চাপ ও মানসিক নির্যাতনের কারণে অনেকে গ্রামীণ ব্যাংকের চাকরি ছেড়ে চলে যাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ব্যাংকে সবসময় কাজের চাপ থাকে। এটি যারা সহ্য করতে পারেননি তারাই চাকরি ছেড়েছেন। আমাকেও তো হেড অফিস সবসময় কাজের চাপের মধ্যে রাখে। আমি তো প্রেশার সহ্য করে যাচ্ছি।’

গ্রামীণ ব্যাংক কর্মকর্তা মোহাম্মদ উল্লাহর বদলি ও স্ট্রোক করে আইসিইউতে ভর্তি বিষয়ে উস্মা প্রকাশ করেছেন ব্যাংকের কক্সবাজার জোনের সাবেক জোনাল ম্যানেজার এমডি বাকের চৌধুরী। তিনি ফেসবুক পোস্টে বলেন, কর্মকালীন সময়ে মোহাম্মদ উল্লাহর সকল কাজকর্ম কাছ থেকে অবলোকন করেছি। সে একজন সৎ, নিষ্ঠাবান ও গ্রামীণ ব্যাংকের একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে তাকে জানতাম।
তিনি বলেন, তাকে সেকেন্ড অফিসার হিসেবে পদায়নও দিয়েছিলাম। এইধরনের একজন কর্মীর দুঃসংবাদে সত্যিই আমি আন্তরিক ভাবে ব্যথিত।
গ্রামীণ ব্যাংকের কক্সবাজার জোনের সাবেক আরেক কর্মকর্তা মিজানুর রহমান লিখেছেন, মোহাম্মদ উল্লাহ আমার অত্যন্ত ভালো সহকর্মী ছিলো। তাকে কী কারণে বদলি করা হলো অবগত না, কিন্তু তার দু:সময়ে শাররীক সুস্থতা কামনা করছি।

কক্সবাজার গ্রামীণ ব্যাংকের জোনাল ম্যানেজার খান মোহাম্মদ মোস্তফা কবির বলেন, কর্মকর্তা-কর্মচারীর বদলীর বিষয়টি গ্রামীণ ব্যাংকের মানব সম্পদ বিভাগের নির্দেশে হয়ে থাকে। এ সংক্রান্ত আমাদের কিছু নির্দেশনা রয়েছে। তাই সব বিষয়ে গণমাধ্যমে কথা বলা যাবে না।

 

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও খবর

© All rights reserved © 2019 LatestNews
Theme Customized BY Iliaych