মৎস্য ঘেরে টাকা চুরির অপবাদে গরম পানিতে ঝলসে দেওয়া হয়েছে দুই কিশোরের শরীর। চকরিয়া পৌরসভার এক কাউন্সিলরের মাছের ঘেরে নিয়োজিত শ্রমিকের ছোড়া গরম পানিতে দুই কিশোরের শরীর ঝলসে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার সকাল আনুমানিক ছয়টার দিকে চকরিয়া উপজেলার সাহারবিল ইউনিয়নের রামপুর এলাকার ৪ নম্বর হোল্ডারে কাউন্সিলর আব্দুস সালামের মাছের ঘেরে ঘটনাটি ঘটেছে।
কিশোরদের ঝলসানো শরীরের কয়েকটি ভিডিও চিত্র পরদিন রোববার রাতে সামাজিক যোগাযোগ (ফেসবুক) মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে নড়চড়ে বসেন স্থানীয় প্রশাসন।
এ ঘটনায় এক শিশুর দাদা বাদি হয়ে শনিবার রাতে চকরিয়া থানায় একটি এজাহার জমা দেন। ঘটনার দুইদিন পর পুলিশ সোমবার দুপুরে মৎস্য ঘেরটির মালিক চকরিয়া পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবদুস ছালামকে আটক করেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চকরিয়া থানার ওসি চন্দন কুমার চক্রবর্তী।
আহত দুই কিশোর হলেন উপজেলার পূর্ববড় ভেওলা ইউনিয়নের ঈদমনি লালব্রিজ এলাকার মোজাম্মেল হকের ছেলে মনির উদ্দিন (১৪) ও একই এলাকার মোহাম্মদ ইউছুফের ছেলে মোহাম্মদ সিফাত (১৬)। তারা চকরিয়া উপজেলা সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন।
স্থানীয় মৎস্য ঘেরের শ্রমিকরা বলেন, শুক্রবার দিবাগত রাত একটার দিকে চকরিয়া পৌরসভার কাউন্সিলর আবদুস ছালাম নিয়ে দুটি ইঞ্চিন চালিত নৌকায় করে তার মাছের ঘেরে চৌয়ারফাঁড়ি ঘাট থেকে মাছ ধরার শ্রমিক নিয়ে যায় কিশোর মনির উদ্দিন ও মো. সিফাতকে। পরে শ্রমিকদের পুনরায় চৌয়ারফাঁড়ি ঘাটে আনতে হবে এজন্য কাউন্সিলরের মাছের ঘেরের পাশে নৌকা নোঙর করে ঘুমিয়ে পড়ে ওই দুই কিশোর।
দুই কিশোরের স্বজনরা অভিযোগ করে বলেন, শনিবার ভোরে কাউন্সিলর আবদুস ছালাম নিজের শার্টের পকেট থেকে ১৮ হাজার ৬০০ টাকা চুরি করেছে এমন অজুহাত তুলে কিশোরদের মাছের ঘেরের টঙ ঘরে নিয়ে যান। এসময় আব্দুস ছালামের নেতৃত্বে মো. ছাদেক ও মো. নাছির উদ্দিন নামের দুইব্যক্তি ওই কিশোরদের ব্যাপক মারধর করে। পরে কিশোরদের শরীরে গরম পানি ছুঁড়ে শরীর ঝলসে দেওয়া হয়।
স্থানীয় লোকজন ও আত্মীয়-স্বজনেরা খবর পেয়ে ওই দুই কিশোরকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে চকরিয়া সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে।
এঘটনায় আহত কিশোর মনির উদ্দিনের দাদা আব্দুল কাদের বাদি হয়ে শনিবার (২০ মে) রাতে একটি এজাহার জমা দেন। এজাহারে পৌর কাউন্সিলর আব্দুস ছালাম, তাঁর মাছের ঘেরের কর্মচারী মো. ছাদেক ও নাছির উদ্দিনকে আসামি করা হয়েছে।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চন্দন কুমার চক্রবর্তী বলেন, দুই কিশোরকে নির্যাতন ও গরম পানিতে শরীর ঝলসে দেওয়ার ঘটনায় চকরিয়া পৌরসভার কাউন্সিলর আবদুস ছালামসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এ মামলায় কাউন্সিলরকে গ্রেফতার করা হয়েছে।