বন্যার পানি নেমে যাওয়ার শুরুতে মাতামুহুরী নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। বুধবার দুপুরে চকরিয়া উপজেলার লক্ষ্যারচর ইউনিয়নের চরপাড়া গ্রামে মুহুর্তে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে স্থানীয় আবদুল জব্বার নামের একব্যক্তির বসতঘরের সিংহভাগ এলাকা। বর্তমানে নদী ভাঙনের চরম ঝুঁকিতে পড়েছেন ওই গ্রামের অন্তত ৩৫ পরিবারের বসতঘর। এ অবস্থায় এলাকার লোকজনের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, লক্ষ্যারচর ইউনিয়নের চরপাড়া এলাকার বাসিন্দা আবদুল জব্বার ছাড়াও বাচ্চু সওদাগর, নুরুল আলম, আবদুল মতলব, মোহাম্মদ ফারুক, মোহাম্মদ শরীফ, শাহ আলম, আবু শামা, নুরুল হুদা, জাহেদুল ইসলাম, মোহাম্মদ ইসহাক, তৌফিকুল ইসলাম, আব্বাস আহমদের বসতভিটা যে কোন মুহূর্তে মাতামুহুরী নদীতে বিলীন হয়ে যাবে। নিজের বসতভিটা হারানোর ভয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েছে পরিবার গুলো।
স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল জব্বার জানান, ঢলের পানি নেমে যাওয়ায় মাতামুহুরী নদীর দুইপার ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। বুধবার দুপুরে তার বসতভিটার গাছপালাসহ বেশকিছু অংশ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এখন নদীতে বিলীন হবার পথে তার এলাকার প্রায় ৩৫ পরিবারের বসতঘর। যে কোন মুহুর্তে তার বাড়িসহ আরও ৩০-৩৫টি বাড়ি নদী গর্বে বিলিন হয়ে যেতে পারে। দ্রুত সময়ের মধ্যে বালির বস্তা দিয়ে বসতঘর গুলোকে রক্ষার দাবী জানান তিনি।
লক্ষ্যারচর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজাউল করিম সেলিম জানান, ভয়াবহ বন্যায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারে বন্যার পানি বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। বুধবার পানি নামতে শুরু করেছে। পানি নামার পর নদীর দুই পারে দেখা দিয়েছে ভাঙ্গন। তিব্র ভাঙ্গনের মুখে পড়ছে লক্ষ্যারচর চরপাড়ার স্থানীয় আবদুল জব্বার সহ বেশকিছু ঘর। দ্রুত সময়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্থানীয় সাংসদসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবী জানিয়েছেন তিনি।
একইভাবে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি হাবিবুর রহমান চৌধুরী বেদার জানান, এবারের বন্যায় পানির তিব্রতা বেশি ছিলো। নদীতে উপচে পড়া পানি। ভাঙ্গনের মুখে পড়েছে চরপাড়ার ৩৫টি বসতঘরের। দ্রুত সময়ের মধ্যে এসব পরিবার গুলোর বসতভিটা রক্ষার পানি সম্পদ মনন্ত্রালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
লক্ষ্যারচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন মোহাম্মদ বুলেট বলেন, বন্যার পানি ও অবৈধভাবে বালু উত্তোলনর কারণে ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়েছে। তারপরও মাতামুহুরী নদীর ভাঙনের কবল থেকে অসহায় পরিবারগুলো বসতভিটা, পাশের ছিকলঘাট স্টেশনের দোকানপাট ও জনগণের যানমাল রক্ষায় নদীর তীরে জরুরী ভিত্তিতে বালুর বস্তা বসাতে হবে। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পানি উন্নয়ন বোর্ড বান্দরবানের নির্বাহী প্রকৌশলীর হস্তক্ষেপ কামনা করার কথা জানান তিনি।
বান্দরবান পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অরূপ চক্রবর্তী বলেন, লক্ষ্যারচর ইউনিয়নের চরপাড়া এলাকায় মাতামুহুরী নদীর ভাঙনে বসতঘর বিলীন হচ্ছে শুনে পাউবোর একটি টিম পাঠানো হয়েছে। তাদের সরেজমিন রিপোর্টের ভিত্তিতে ওই এলাকায় নদী ভাঙন প্রতিরোধে জরুরী প্রকল্পের আওতায় তীর সংরক্ষণ কাজের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।