ভয়াবহ বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সময় বাড়ির সেফটি ট্যাংক পরিস্কার করতে গিয়ে পিতা ও দুই পুত্র সহ ৩ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাস্থলে দুইপুত্রের মৃত্যু হলেও চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্য পিতার। এমন হৃদয় বিদারক ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার রাত ১০টায় কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার বিএমচর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের বহদ্দারকাটা গ্রামে। নিহতরা হলেন- ওই এলাকার মৃত মনিরুল্লাহর পুত্র আনোয়ার হোসেন (৭০), আনোয়ার হোসেনের দুই ছেলে শহিদুল ইসলাম (২২) ও শাহাদাত হোসেন (৪৮)। অন্যদিকে বৃহস্পতিবার সকাল দশটায় খুটাখালীতে অজ্ঞাত যুবকের ভাসমান লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, রবিবার, সোমবার ও মঙ্গলবার টানা ভারিবর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানি কক্সবাজারের চকরিয়ায় ভয়াবহ বন্যা হয়েছে। দুইদিন পর বন্যার পানি নামতে শুরু করে। পানি নামার সময় বিএমচর ইউনিয়নের বাসিন্দা আনোয়ার হোসেনের পুত্র শহিদুল ইসলাম (২২) তার বাড়ির সেফটি ট্যাংক পরিস্কার করতে গিয়ে অজ্ঞান হয়ে যায়। ওইসময় সাড়া শব্দ না পাওয়ায় বড় ভাই শাহাদত হোসেন (৪৮) সেফটিট্যাঙ্কে ঝাঁপ দিয়ে শহীদুল ইসলামকে উদ্ধারের চেষ্ঠা চালায়। ওইসময় শাহদাত হোসেনও অজ্ঞান হয়ে সেখানে পড়ে থাকে। বিষয়টি বুঝতে পেরে তাদের বাবা আনোয়ার হোসেন চিৎকার দিয়ে ওই ট্যাঙ্কে ঝাঁপ দেয়। তিনজনই সেখানে অজ্ঞান হয়ে পড়ে থাকে। এসময় আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে বাবা আনোয়ার হোসেন ও দুইভাইকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করেন। শহীদুল ইসলাম ও শাহাদত হোসেন চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে মৃত্যু ঘোষণা করে কর্মরত চিকিৎসক। পরে তাদের বাবাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু ঘটে। একই পরিবারের তিনজনের মৃত্যুতে এলাকায় চলছে শোকের মাতম।
এদিকে চকরিয়া উপজেলার খুটাখালী ইউনিয়নে একব্যক্তির অজ্ঞানামা লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল দশটার দিকে মহেশখালী চ্যানেলে ভাসমান অবস্থায় লাশটি উদ্ধার করা হয়। লাশটি পচে গলে যাওয়ায় সনাক্ত করতে পারছে না। ওই লাশটি গত সোমবার সকাল ৯টার দিকে মাতামুহুরী নদীতে ঢলের পানিতে ভেসে আসা লাকড়ি ধরতে গিয়ে শাহ আলম নামে এক যুবক নিখোজ হয়েছিলো। ধারণা করা হচ্ছে, ওই লাশটি শাহ আলমের। বর্তমানে তার পরিবার উদ্ধার হওয়া লাশটি তার বলে দাবী করেছেন। এরপরও নিশ্চিত হওয়ার জন্য কক্সবাজার সদর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্র্তা জাবেদ মাহমুদ। শাহ আলম চকরিয়া উপজেলার লক্ষ্যারচর ইউনিয়নের হাজি পাড়া গ্রামের মৃত জাকের হোছাইনের পুত্র। তিনি পেশায় একজন পান ব্যবসায়ী।
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাবেদ মাহমুদ আরও বলেন, বিএমচরের বহদ্দারকাটাস্থ একই পরিবারের পিতা ও দুই পত্রের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। তাৎক্ষনিক মাতামুহুরী পুলিশ ফাঁড়ির আইসিকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। সেখান থেকে তাদেরকে উদ্ধার করে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। ওই দুই হাসপাতালে পিতা ও দুই পুত্রের মৃত্যু হয়েছে। #