কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ রেজাউল করিমের এমপিও স্থগিত করেছে বাংলাদেশ মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড। বর্তমানে পিএমখালী উচ্চ বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষকদের এমপিও তালিকা অনলাইনে বেতন ভাতা আসলেও প্রধান শিক্ষক রেজাউল করিমের নামের পাশে বেতন ভাতা শুন্য দেখাচ্ছে। এর আগে গত ২৫জুন প্রধান শিক্ষক রেজাউল করিমের বেতন ভাতাদি কেন বাতিল বা স্থগিত করা হবে না তা জানতে ৭ দিনের মধ্যে জবাব দিতে নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। মাউশির সহকারী পরিচালক কাওসার আহামেদ।
জানা গেছে, কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালীর ঐতিহ্যবাহী এই উচ্চ বিদ্যালয়টি দীর্ঘদিন ধরে অনিয়ম দূর্নীতিতে ভরপুর ছিল। তারমধ্যে প্রধান শিক্ষক সহ পূর্বের বিভিন্ন সময়ে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির প্রত্যক্ষ ইন্দনে এসব অনিয়ম দূর্নীতি চলে আসছিল, এসব বিষয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত হয়েছিল।
তবে এসব অনিয়ম দূর্নীতির মূলে ছিল বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: রেজাউল করিম। তার নিয়োগ সহ নানান অনিয়ম নিয়ে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সহ বিভিন্ন দপ্তরে তদন্তে সেটি প্রমানিত হয়। সর্বশেষ কক্সবাজার জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো: নাছির উদ্দিন স্বাক্ষরিত মাউশিতে প্রেরিত একপত্র থেকে জানা গেছে, পিএমখালী উচ্চ বিদ্যালয়ের বর্তমান প্রধান শিক্ষক মো: রেজাউল করিমের নিয়োগ বিধি বর্হিভূত ভাবে হয়েছে। উক্ত চিঠিতে বলা হয়েছে মো: রেজাউল করিম এর কাম্য শিক্ষাগত যোগ্যতা অর্জনের পূর্বে অঙ্গিকারনামা নিয়ে তাকে নিয়োগ করা হয় যা নীতিমালাতে নাই, তাই উক্ত নিয়োগ বিধি বর্হিভূত। তিনি ১৫/২/১৯৮৯ সালে রেজুলেশনে সাদাকালি দিয়ে মুছে অফিস সহকারীর বদলে সহকারী শিক্ষক লিখে দেন।
এছাড়া তার প্রধান শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ ১৯৯৫ জনবল কাঠামো অনুযায়ী সরকারি নিময় বিধি মানা হয়নি তাই তার নিয়োগ বিধি বহির্ভূত হয়েছে। এদিকে উক্ত পত্রের আলোকে বাংলাদেশ মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর কেন প্রধান শিক্ষক রেজাউল করিমে এমপিও স্থগিত সহ তার বেতন ভাতা স্থগিত হবে না তা জানতে চেয়ে চিঠি প্রদান প্রদান করেন মাউশির সহকারী পরিচালক কাওসার আহামদ। তবে তিনি সদোত্তর দিতে না পারায় বর্তমানে প্রধান শিক্ষকের এমপিও অনলাইনে শুন্য দেখাচ্ছে অর্থাৎ তার এমপিও স্থগিত করা হয়েছে।
এব্যাপারে পিএমখালী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: রেজাউল করিম বলেন, এমপিও অনলাইনে শুন্য আসছে সেটা সত্য। এগুলো আমার বিরুদ্ধে একটি পক্ষ ষড়যন্ত্র করেছে। আমি আর কিছু বলতে চাই না।
এ ব্যাপারে পিএমখালী উচ্চ বিদ্যালয়ের বর্তমান পরিচালনা কমিটির আহবায়ক এড.ছৈয়দ রেজাউর রহমান বলেন, আমি নতুন দায়িত্ব নিয়েছি। আমি চেস্টা করছি জেলার এই ঐহিত্যবাহী স্কুলটিকে আগের সুনার ফিরিয়ে আনতে। আর প্রধান শিক্ষকের এমপিও অনলাইনে শুন্য দেখাচ্ছে। আমি জেনেছি তার এমপিও স্থগিত বা বাতিল হয়েছে। ফলে আমি উনাকে কোন ধরনের চেকে স্বাক্ষর না করার জন্য বলে দিয়েছি। তিনি বলেন, আমি কোন ভাবেই কোন ধরনের অন্যায় বা দূর্নীতি পশ্রয় দেব না।
এদিকে পিএমখালী এলাকার বেশ কয়েকজন সাবেক ও বর্তমান জনপ্রতিনিধি সহ সচেতন মহল বলেন, স্কুলটি এই এলাকার অনেক পুরাতন স্কুল কিন্তু সবসময় কিছু অসৎ মানুষের কারনে স্কুলটি মাথা তুলে দাড়াতে পারেনি। স্কুলের টাকায় অনেকে ঘরের বাজার খরচ ও চালায়, স্কুলের শিক্ষকদের মধ্যে কোন নিয়ম কানুনের বালায় নেই। লেখাপড়ার মানও খুব নিন্ম তাই স্কুলের সার্বিক উন্নতি সহ শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনা দরকার।