কক্সবাজারের চকরিয়ার আলোচিত ইউপি চেয়ারম্যান ও দেড় ডজন মামলার আসামী নবী হোসাইনের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ৬টি বন্যপ্রাণী উদ্ধার করেছে র্যাব-১৫। প্রায় একঘন্টার অভিযানে ১টি চিতা বিড়াল, ৩টি সাদা বক, ১টি ময়না পাখি ও ১টি গন্ধগোকুল উদ্ধার করেছে। পরে উদ্ধারকৃত বন্যপ্রাণী গুলো ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে হস্তান্তর করা হয়েছে। শুক্রবার ২৯ মার্চ সকাল দশটার দিকে এ অভিযান পরিচালনা করে র্যাব-১৫।
স্থানীয় এলাকাবাসি জানান, সাহারবিল ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান নবী হোসাইনের বিরুদ্ধে পুলিশের উপর হামলা, চিংড়িঘের দখল, ডাকাতি, সাধারণ মানুষের জায়গা দখল, গরুচুরি সহ নানা অভিযোগ রয়েছে। নবী হোসাইন আন্ত:জেলা গরুচোর সিন্ডিকেটের প্রধান হিসেবে পরিচিতি রয়েছে। নবী হোসাইন ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে গড়ে তুলেছেন একটি নিজস্ব বাহিনী। এই বাহিনীর হাতে বিপুল পরিমান অবৈধ অস্ত্রও রয়েছে। পুরো কক্সবাজার জেলায় নানা অপরাধ করে আসছে তার বাহিনী। গত পাঁচবছর ধরে নবী হোসাইনের নানা অপরাধ ও অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। সম্প্রতি তার আপন বড় ভাই লেদু ডাকাত র্যাবের হাতে আটক হয়েছিলেন। ইতোমধ্যে নবী হোসাইনের বাড়িতে একাধিকবার অভিযান চালিয়েছে র্যাব ও পুলিশ। অভিযান চালানোর পরও তাকে গ্রেফতার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলাবাহিনী। নবী হোসাইনের বিরুদ্ধে পুলিশের উপর হামলা, হত্যা, প্রবাসীর ঘর ডাকাতি, গরুচুরি, চিংড়িঘের দখল, অপহরণ, আওয়ামী লীগ নেতাদের উপর হামলা সহ নানা অপরাধে চকরিয়া ও মহেশখালী থানায় প্রায় ১৭টি মামলা রয়েছে। এরমধ্যে চকরিয়া ও মহেশখালী থানার ৬টি মামলায় গ্রেফতারী পরোয়ানা রয়েছে। পুলিশের খাতায় পলাতক থাকলেও এলাকায় ধাপিয়ে বেড়াচ্ছেন এই ইউপি চেয়ারম্যান। নানা অপকর্ম করে বার বার আলোচিত হলেও ধরাচোয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছেন তিনি। স্থানীয় একজন প্রভাবশালী নেতার আশ্রয় প্রশ্রয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন নবী হোসাইন। নবী হোসাইন গত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে পলাতক থাকলেও মাঝে মধ্যে আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে দেখা যেতো বলে জানিয়েছেন স্থানীয় এলাকাবাসী।
এদিকে র্যাব-১৫ জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সাহারবিল ইউপি চেয়ারম্যান নবী হোসাইনের বাড়িতে ব্যাপক অভিযান চালানো হয়েছে। শুক্রবার ২৯ র্মাচ সকাল দশটার দিকে র্যাব-১৫ এর একটি অভিযানিক দল তার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন প্রকার বন্যপ্রাণী উদ্ধার করেছে। তবে অভিযানের সময় নবী হোসাইন বাড়িতে ছিলেন না। উদ্ধারকৃত প্রাণীর মধ্যে ১টি চিতা বিড়াল, ৩টি সাদা বক, ১টি ময়না পাখি ও ১টি গন্ধগোকুল। পরে উদ্ধারকৃত বন্যপ্রাণী গুলো ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে হস্তান্তর করা হয়। হস্তান্তরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের তত্বাবধায়ক মাজহারুল ইসলাম।
অবৈধভাবে বন্যপ্রাণী রাখার দায়ে নবী হোসাইনের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানান তিনি। এবিষয়ে সাহারবিল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নবী হোসাইনের সাথে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
সাহারবিল ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়িতে র্যাবের অভিযানের কথা নিশ্চিত করেছেন চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ আলী। তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধের একাধিক মামলা রয়েছে। এরমধ্যে ৫টি মামলায় গ্রেফতারী পরোয়ানা রয়েছে। অভিযানের সময় তার বাড়ি থেকে বন্যপ্রাণী উদ্ধার করেছে। তবে এখনো নবী হোসাইনের বিরুদ্ধে কেউই অভিযোগ দেননি বলে জানান তিনি।
Leave a Reply