বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ০৩:৩৮ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ :
প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যানের নিয়োগ পেলেন চকরিয়ার সন্তান রেজাউল করিম চকরিয়ায় সাঈদী-জাফরের অস্তিত্বের লড়াই! সদর হাসপাতালে অনিয়মে ভরা নিয়োগ পরীক্ষা : পক্সি দিতে এসে যুবক আটক চকরিয়ায় আচরণ বিধি লঙ্ঘনের দায়ে সাত প্রার্থীকে ৩২ হাজার টাকা জরিমানা  পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির ২য় বৈঠক অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচনে সভাপতি সম্পাদকের পরাজয় মানে ভোট সুষ্টু হয়েছে—পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড.হাসান ১৯ বছর পর আবারো নুরুল আবছারের নামের পাশে চেয়ারম্যান দোয়াত কলম প্রতীকের প্রার্থী ফজলুল করিম সাঈদীকে জেতাতে নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ সদরে আবছার মহেশখালীতে জয়নাল কুতুবদিয়ায় হানিফ বিন কাশেম জয়ী জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহে চকরিয়া উপজেলার শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নুরুল আখের ও শ্রেষ্ঠ স্কাউট শিক্ষক আনছারুল করিম 

খুরুশকুল আশ্রয়ন প্রকল্পে দ্বিতীয় ধাপের ফ্ল্যাট বিতরণ তালিকা প্রণয়নে হ-য-ব-র-ল অবস্থা ভাড়াটিয়া, রোহিঙ্গাদের নাম উঠছে তালিকায়

নিজস্ব প্রতিবেদক :
  • সময় : বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪
  • ৩৭ পঠিত

কক্সবাজার শহরের বাঁকখালী নদীর পূর্ব-উত্তর তীরে খুরুশকুল এলাকা। সেখানে অধিগ্রহণ করা ২৫৩ দশমিক ৩৫০ একর জমিতে গড়ে উঠছে ১৩৭টি পাঁচতলা ভবনের বিশেষ ‘খুরুশকুল আশ্রয়ণ প্রকল্প’। এটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ অগ্রাধিকার প্রকল্প। প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালে। এই প্রকল্পের দুই বছর আগে প্রথম ধাপে তৈরি ২০টি ভবনে মাথা গোঁজার ঠাঁই হয়েছে ৬০০ জলবায়ু উদ্বাস্ত পরিবারের। দ্বিতীয় ধাপে আরও আড়াই হাজার পরিবারকে মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দিতে প্রস্তুত করা হচ্ছে আরও ৮০টি ভবন। পাঁচতলা প্রতিটি ভবনে ৬৫০ বর্গফুট আয়তনের ফ্ল্যাট থাকছে ৩২টি।

এ ক্ষেত্রে ১৩৭টি ভবনে ফ্ল্যাট হবে ৪ হাজার ৩৮৪টি। বিনা মূল্যেই এই ফ্ল্যাটের মালিক হচ্ছেন জলবায়ু উদ্বাস্তুরা। ফ্ল্যাটের জন্য ২০১১ সালে তালিকাভুক্ত করা হয় ৪ হাজার ৪০৯টি পরিবারকে।
সম্প্রতী জলবায়ু উদ্বাস্তদের জন্য নির্মিত খুরুশকুল আশ্রয়ন প্রকল্পে নতুন করে ঘর দেওয়ার প্রকৃয়া শুরু করেছে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। সেনাবাহিনীর তত্ত¦াবধানে নতুন করে নির্মিত ৮০ টি ভবনে প্রায় ২৫০০ পরিবারকে ঠাই দেওয়া হবে আশ্রয়ন প্রকল্পে। ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসনের তত্বাধানে উপজেলা ভুমি অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীরা উপকার ভুগি অর্থাৎ ঘর প্রাপ্তদের তালিকা করলেও শুরুতেই হযবরল অবস্থায় দেখা যাচ্ছে এ সব তালিকা প্রণয়নে। ইতি মধ্যে পৌর এলাকার সমিতি পাড়া,কুতুবদিয়া পাড়া,ফদনার ডেইলে গড়ে উঠেছে বেশ কয়েকজন দালালের সিন্ডিকেট। তালিকায় নাম উঠানোর কথা বলে অনেকে মোটা অংকের আর্থিক লেনদেন করছে বলেও জানা গেছে।

এছাড়া অনেক রোহিঙ্গা স্থান পাচ্ছে তালিকায়। আবার অনেক ভাড়াটিয়া, এলাকায় নাই এমন ব্যাক্তিরা,স্থানীয় জনপ্রতিনিধির আত্মীয় স্বজন বা মনোনীত ব্যক্তি তালিকায় নাম উঠাতে তোড়জোড় চলছে যা সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে। তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার এবং দেশের একমাত্র জলবায়ু উদ্বাস্তদের জন্য নির্মিত আশ্রয়ন প্রকল্পে ঘর দেওয়ার নামে অনিয়ম দূর্নীতি সহ অনৈতিক বানিজ্য বন্ধ করে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্থদের ঘর বরাদ্ধ দেওয়ার দাবী জানিয়েছেন কক্সবাজারের সুশীল সমাজ।

২৩ এপ্রিল ও ২৪ এপ্রিল সকালে কক্সবাজার শহরের ১নং ওয়ার্ডের বিভিন্ন পাড়া মহল্লা ঘুরে স্থানীয় মানুষজনরে সাথে কথা বলে জানা গেছে, এলাকায় গত ১০/১২ দিন ধরে উপজেলা ভুমি অফিসের লোকজন সকাল বেলা এসে খুরুশকুল আশ্রয়ন প্রকল্পে নতুন করে ঘর বা ফ্ল্যাট দেওয়ার জন্য তালিকা করছে। স্থানীয় খোরশেদ আলম,দেলোয়ার হোসেন,নজির হোসেন সহ অনেকে বলেন, তালিকা মূলত আগের একটা আছে সেটা নিয়ে তারা যাচাই বাছাই করছে। আবার নতুন করে তালিকা করছে। এখানে আগের তালিকার ৫০% মানুষ নাই। অনেকে এলাকা ছেলে চলে গেছে, অনেকে মারা গেছে,আবার অনেকে এক ঘর থেকে ১০ ঘর হয়েছে। সে জন্য অনেকে তালিকায় নাম উঠানোর জন্য দূর দূরান্ত থেকে এসে এখন এলাকায় বসাবাস করছে। আবার ইতি পূর্বে ভোটার হওয়া শত শত রোহিঙ্গা তালিকায় নাম ঊঠানোর জন্য লাখ লাখ টাকা লেদদেন করছে বলেও জানা গেছে,আবার মৃত ব্যক্তিদের একই নাম ব্যবহার করে অনেকে প্রতারনা করছে। মূলত স্থানীয় কাউন্সিলার এবং তাদের কিছু দালাল শ্রেণীর লোকজন সার্বক্ষনিক জরিপকারীদের সাথে থাকে। দালালরা যা বলে জরিপকারীরা তা লিখে চলে যায়। মোট কথা এখানে তালিকা প্রণয়ন নিয়ে একটি ব্যাপক অনিয়ম দূর্নীতি হচ্ছে।
মাঠ পর্যায়ে গিয়ে জানা গেছে, দালালদের মধ্যে অন্যতম মধ্যম কুতুবদিয়া পাড়ার নুরুউদ্দিন, শুক্কুর, জিল্লু, জিয়া, মানিক, মহেশখালীর নেছার জাবের, ছালাম সহ অনেকে তালিকায় নাম উঠানোর কথা বলে মানুষজন থেকে টাকা আদায় করছে। তারা অত্যন্ত গোপনে এসব টাকার লেনদেন করে।
স্থানীয় কয়েকজন প্রতিবাদকন্ঠে বলেন, খুরুশকুল আশ্রয়ন প্রকল্পে ইতিপূর্বে ৬০০ পরিবার ফ্ল্যাট পাওয়াদের মধ্যে অনেকে রোহিঙ্গা আছে,আবার অনেকে ১নং ওয়ার্ডের ভোটারও নয়, বাড়িঘরও এখানে নাই। তাহলে তারা কিভাবে ফ্ল্যাট পেয়েছে। এখনো ঠিক সেখানে সবকিছু টাকার জোরে অনিয়ম দূর্নীতির মাধ্যমে হবে। কেউ কিছু করতে পারবে না। আপনারা খবর নিয়ে দেখেন ইতিমধ্যে তালিকা এবং ফ্ল্যাট দেওয়ার কথা বলে অন্তত ১ কোটি টাকার চাঁদাবাজি হয়েছে। অনেকে লিখিত স্টাম্প করেও টাকা দিয়েছে।
আর বর্তমানে ভুমি অফিস থেকে আসা লোকজনের সাথে সার্বক্ষনিক দালালরা থাকে, তারা যাকে বলে তাকেই তালিকা ভুক্ত করছে, আবার পুরাতন দের সনাক্ত করছে। সবার সামনে টাকার লেনদেন না হলেও সন্ধ্যার পরে ভুমি অফিসে গিয়ে দেখেন সবাই লাইন ধরে। আবার বর্তমানে আশ্রয়ন প্রকল্পে আছে এমন ব্যক্তিরা ও তাদের স্ত্রী বা ছেলেমেয়ের নামে ফ্ল্যাট নেওয়ার জন্য দৌড়ঝাপ করতে দেখা যাচ্ছে। মোট কথা টাকা ছাড়া কোন কাজ হবে না।
এব্যপারে কক্সবাজার পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলার আকতার কামাল বলেন, মূলত ২০১২ সালের তালিকা অনুযায়ী তারা এখানে আছে কিনা সেটা যাচাই বাছাই করা হচ্ছে। এছাড়া নতুন করে একটি তালিকা হচ্ছে,সেখানে ভুমি অফিসের লোকজন সরজমিনে গিয়ে জরিপ করছে। এখানে কোন দালাল নাই, আর রোহিঙ্গা বা এলাকায় নাই এমন কোন ফ্ল্যাট পাবে না। সে জন্য প্রশাসন এবং আমরা সার্বক্ষনিক তদারকিতে আছি।

এ ব্যাপারে কক্সবাজার সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) আরিফ উল্লাহ নিজামী বলেন, খুরুশকুল আশ্রয়ন প্রকল্পে সেনাবাহিনীর তত্বাবধানে নতুন করে ৮০টি ভবন প্রস্তুত হয়েছে। যেখানে প্রায় ২৫০০ মানুষকে স্থান দেওয়া হবে। তবে এখনো নতুন করে ফ্ল্যাট দেওয়া বা অন্যকোন কার্যক্রম শুরু হয়নি। মূলত ২০১২ সালের প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় হতে অনুমোদিত একটি তালিকা আছে, সেই তালিকা আমরা যাচাই বাছাই করছি। সাথে নতুন করে উপকারভোগীদের তালিকা প্রণয়ন করা হচ্ছে। এখানে কোন অনিয়ম হওয়ার সুযোগ নেই। তার পরও কোন অনিয়ম হয়ে থাকলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

https://www.facebook.com/

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2018 News Smart
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com